শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

কুরবানীর ফজিলত, গুরুত্ব, মাহাত্ম্য, হিকমত ও শিক্ষা

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০

নিউজটি শেয়ার করুন

অকৃত্রিম প্রেম প্রীতি ও নিবীড় সেতুবন্ধনের এক অনন্য উপকরন হচ্ছে কুরবানী। এই কুরবানীর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করতে পারে। কোরবানি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিধান।মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতিটি বিধানের পিছনে রয়েছে অর্ন্তনিহীত তাৎপর্য। মালিকের দেওয়া জীবন, মালিকের দেওয়া সম্পদ থেকে মালিকের নামে কোন কিছু বিলিয়ে দেওয়ার অভ্যাসে অভ্যস্থ করানোর উত্তম নমুনা হচ্ছে কুরবানী। এই আত্মত্যাগের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে পারে তাইতো এই কুরবানীর মধ্যে এতো গুরুত্ব ও ফজিলত ,তথমধ্য থেকে কিছু উপস্থাপনের প্রয়াস পাব ।ইনশাআল্লাহ।

কুরবানীর গুরুত্ব:

কুরবানীর গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআন ও হাদীস এ ব্যাপারে ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবীবকে লক্ষ করে বলেন, فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ؕ
‘তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ছালাত আদায় কর এবং কুরবানী কর’(কাওছার-২)।

আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন-
وَلِكُلِّ اُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللّٰهِ عَلٰى مَا رَزَقَهُمْ مِّنْۢ بَهِيْمَةِ الْاَنْعَامِ ؕ
আমি প্রত্যেক জাতীর জন্য কুরবানী নির্ধারন করে দিয়েছি৷ যাতে আমি তাদেরকে জাবনোপকরণ স্বরুপ যেসব চতুষ্পদ জন্তুু দিয়েছি, তা যবেহ করার মাধ্যমে যেন আল্লাহর নাম উচ্চারন করে৷ (সুরাহ হজ ৩৪ আয়াত)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ “‏ مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا ‏”‏ ‏

হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও কুরবানী করেনা, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। সনদ হাসান৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২৩ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৮০৭৪ হাদীস৷ আশরাফুল হিদায়া ৯/৪৭১ পৃষ্ঠা৷)
যারা কুরবানী পরিত্যাগ করে তাদের প্রতি এ হাদীস একটি সতর্কবাণী।

অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানী করার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

«يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَى كُلِّ أَهْلِ بَيْتٍ فِي كُلِّ عَامٍ أُضْحِيَّة»

“হে লোক সকল, প্রত্যেক পরিবারের উপর কুরবানী দেয়া অপরিহার্য।” [সুনান ইবন মাজাহ-৩১২৫, হাদীসটি হাসান]।

উল্লেখিত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, কুরবানীর গুরুত্ব অপরিসীম।

কুরবানী ইসলামের একটি বড় নিদর্শন যা ‘সুন্নাতে ইব্রাহীমি’ হিসাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে মদীনায় প্রতি বছর আদায় করেছেন এবং সাহাবীগণ(রাঃ)ও নিয়মিতভাবে কুরবানী করেছেন।

কুরবানীর বিধান:

সামর্থবানদের উপর প্রতি বছর কুরবানী করা ওয়াজিব৷ আর সামর্থ থাকা সত্যেও কুরবানী তরককারী ফাসিক৷ কুরবানী তরক কারীদের কঠোর নিন্দা করে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ “‏ مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا ‏”‏ ‏.‏
হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও কুরবানী করেনা, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে। সনদ হাসান৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২৩ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৮০৭৪ হাদীস৷ আশরাফুল হিদায়া ৯/৪৭১ পৃষ্ঠা৷)

অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানী করার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

«يَا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَى كُلِّ أَهْلِ بَيْتٍ فِي كُلِّ عَامٍ أُضْحِيَّة»

“হে লোক সকল, প্রত্যেক পরিবারের উপর কুরবানী দেয়া অপরিহার্য।” [সুনান ইবন মাজাহ-৩১২৫, হাদীসটি হাসান]।

উল্লেখিত হাদীস থেকে কুরবানী করা ওয়াজিব প্রমানিত হয়।

কুরবানীর হিকমত ও তাৎপর্য:

কোরবানির মধ্যে অনেক হিকমত বিদ্যমান। এখানে কিছু বর্ণনা করা হলো:

☑️** কোরবানি শিরক থেকে মুক্ত থাকার একটি কার্যকরী মাধ্যম।

☑️** কোরবানি করার মাধ্যমে সবাই আল্লাহ তা’আলার ক্ষমতা ও আধিপত্য দৃঢ়চিত্তে মেনে নেওয়ার অনুপ্রেরণা পায়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার তাওহীদের স্বীকৃতি ঘোষিত হয়।

☑️** মুসলিমরা বিশ্বাস করে থাকেন আল্লাহ তা’আলাই হলেন এ বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এসব পশু তারই। পশু কোরবানি সেই বিশ্বাসের স্বীকৃতিস্বরূপ।

☑️** আল্লাহ তা’আলা যেসব পশুকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং সেসব পশু দ্বারা আমাদের নানাভাবে উপকার লাভের সুযোগ দান করেছেন তার শুকরিয়া আদায় করা হয় কোরবানির মধ্যমে।

☑️** কোরবানির মাধ্যমে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের স্মৃতি রক্ষা করা হয়। তিনি তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে কোরবানি করার চেষ্টা করেন। তখন আল্লাহ তা’আলা একটি দুম্বাকে তার পরিবর্তে কোরবানি করান। এর মাধ্যমেই কোরবানি প্রবর্তন হয়।

☑️** কোরবানি করার মাধ্যমে দুনিয়ার সম্পদ ও পার্থিব জীবনের ভালোবাসা ইত্যাদি থেকে পরিশুদ্ধি অর্জন করা হয়। কোরবানির পশু জবেহ করার মাধ্যমে বাহ্যত কোরবানি দাতার মালের ক্ষতি হয়। আর এ লোকসান বা ক্ষতি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্যই হয়ে থাকে। তাই জাকাতের মতো এর দ্বারাও সম্পদের ভালোবাসার মধ্যে কিছুটা ঘাটতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে কোরবানি দাতার মনে এই অনুভূতি জাগ্রত হয় যে একটি পশু কোরবানি যখন আল্লাহ তা’আলার দরবারে তার সন্তুষ্টি এবং নৈকট্য অর্জনের কারণ হয়- তাহলে স্বয়ং নিজের জানমাল সবকিছু আল্লাহর রাহে কোরবানি করে দেওয়া আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভের কতো বড় মাধ্যম হতে পারে। এই অনুভূতি তার নিজের প্রতি ভালোবাসা কমিয়ে দিয়ে নিজেকে আল্লাহ তা’আলার রাহে কোরবানি করার চেতনাকে উজ্জীবিত করে।

কুরবানীর শিক্ষা:

আমাদের জীবন, আমাদের সম্পদ সব কিছুই মহান আল্লাহর দান। পরম প্রভুর জন্য প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে পারাই কোরবানির শিক্ষা। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, তার প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত, তারই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা হলো কোরবানি। আমাদের জীবনসম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। কোরবানির দোয়ার মধ্যে মৌলিক যে কথাটি আমরা বলি তা হলোÑ ﴿ قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢

অর্থাৎ আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহর জন্য” (সূরা আনআম-১৬২)। মূলত আমাদের জীবন ও সম্পদের মালিক আল্লাহ। এ দুটো জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ঈমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন’ (সূরা তওবা-১১০)। কাজেই জীবনসম্পদ আল্লাহর এবং তা আমাদের কাছে আমানত। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ও তার পছন্দনীয় পথে ব্যয় করাই ঈমানের দাবি। কোরবানি মানুষকে ঈমানের এ দাবি পূরণের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।

কুরবানীর মাহাত্ম:

মিল্লাতে ইবরাহীমের সে মহান কুরবানীর সূত্র ধরেই আমাদের জন্য আল্লাহ ও রাসূল প্রবর্তন করেছেন এই মহান ইবাদতের। ত্যাগ ও বিসর্জনের এই নিঃশর্ত আনুগত্যের। কুরবানীর মূল প্রাণ, কুরবানীর প্রাণ কথা হল তাকওয়া-খোদাভীতি, আল্লাহর প্রতি নিখুঁত মহব্বত ও ইখলাস। তাকওয়া, মহব্বত ও ইখলাস প্রত্যেকটি কলবের সাথে সম্পৃক্ত। কারণ আল্লাহর গোস্তের প্রয়োজন নেই, রক্তের প্রয়োজন নেই। তিনি তো শুধু মুমিনের তাকওয়ার পরীক্ষা নিতে চান। লোক দেখানো, মানুষের বাহবা কুড়ানো, পার্থিব বড়ত্বের প্রতিযোগিতা, বড় লোকের কাতারে শামিল হওয়া এবং ‘আমার ছেলেরা কার দুয়ারে গোশতের জন্য ধর্ণা দেবে’-এ ধরনের ছোট এ পার্থিব মানসিকতার কুরবানী হয়তো সেই সব সামান্য উদ্দেশ্যকে পূরণ করতে পারে, কিন্তু আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গিত নজরানা হতে পারে না। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা মুত্তাকীদের কুরবানীই কবুল করেন।-সূরা মায়িদা : ২৭ তিনি আরো বলেন, আল্লাহর কাছে না এসব পশুর গোশত পৌঁছে, না তার রক্ত; বরং তার নিকট তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে থাকে।-সূরা হজ্ব : ৬৭

এই কারণেই পূর্ণ ইখলাস ও মহাব্বতের সাথে শুধুই আল্লাহর রেযামন্দীর জন্য কেউ কুরবানী করলে তা আল্লাহর দরবারে মকবুল হয়। এমনকি পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর কাছে তা কবুল হওয়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছে।-জামে তিরমিযী হাদীস : ১৪৯৩

কুরবানীর ফযীলত:

কুরবানীর ফজিলত সংক্রান্ত অনেক হাদিস রয়েছে তথ্মধ্যে কিছু হাদীস উল্লেখ করা হল:

☑️১. হাদীসে এসেছে

عن عائشة رضي الله تعالى عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ما عمل آدمي من عمل يوم النحر أحب إلى الله من إهراق الدم، إنه ليأتي يوم القيامة بقرونها وأشعارها وأظلافها، وإن الدم ليقع من الله بمكان قبل أن يقع من الأرض، فطيبوا بها نفسا.

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কুরবানীর দিনের আমলসমূহের মধ্য থেকে পশু কুরবানী করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন এই কুরবানীকে তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কুরবানীর রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলার নিকট কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কুরবানী কর। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৩)

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে কঠোর ধমকি এসেছে,

عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : من وجد سعة لأن يضحي فلم يضح فلا يقربن مصلانا.

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানী করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)

☑️হাদীসে এসেছে

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ يَوْمَ النَّحْرِ عَمَلًا ، أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ هِرَاقَةِ دَمٍ ، وَإِنَّهُ لَيَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقُرُونِهَا ، وَأَظْلَافِهَا ، وَأَشْعَارِهَا ، وَإِنَّ الدَّمَ لَيَقَعُ مِنَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ بِمَكَانٍ قَبْلَ أَنْ يَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ ، فَطِيبُوا بِهَا نَفْسًا ”
(أخرجه ابن ماجة برقم ৩১২৬ والترمذي برقم ১৪৯৩ والحاكم (৪/ ২২১-২২২ وانظر فقه الأضحية)

“আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত, নবী বলেন, “কুরবানীর দিনে কোন আদম সন্তান কুরবানীর পশুর খুন ঝরানোর চেয়ে মহান আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় আমল করে না। সে কিয়ামত দিবসে উক্ত পশুর শিং, খুর, লোম প্রভৃতি নিয়ে উপস্থিত হবে এবং তার খুন জমিনে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর নির্ধারিত মর্যাদার স্থানে পতিত হয়। অতএব, তোমরা প্রফুল্ল চিত্তে কুরবানীকর।” (ইবনু মাজাহ, হা/৩১২৬, তিরমিযী, হা/১৪৯৩, হাকেম৪ /২২১-২২২ দ্রঃ ফিকহুল উযহিয়্যাহঃহাদীছটি যঈফ)

☑️হাদীসে এসেছে

عن زيد بن أرقم قال قال أصحاب رسول الله: يارسول الله ماهذه الأضاحي؟ قال: سنة أبيكم إبراهيم قالوا: فما لنا فيها؟ قال: بكل شعرة حسنة، قالوا: فالصوف يارسول الله؟! قال بكل شعرة من الصوف حسنة

“যায়েদবিন আরকাম (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ছাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! এই কুরবানীর পশুগুলির তাৎপর্য কি? (কেন আমরা এগুলো যবেহ করে থাকি?) তিনি বললেন: “ইহা তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) এর সুন্নত।” তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, এতে আমাদের কী সওয়াব রয়েছে? তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে।” তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, পশমের মধ্যে যে ছোট ছোট লোম রয়েছে ওগুলোরও কি বিনিময় তাই? নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “ছোট ছোট প্রতিটি লোমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে।” (ইবনু মাজাহ্, হা/৩১২৭, আহমাদ )(৪/৩৬৮), ইবনু হিব্বান ফিল মাজরুহীন (৩/৫৫)হাদীছটি যঈফ)

☑️হাদীসে এসেছে

عن أبي سعيد الخدري قال قال رسوالله صلى الله عليه وسلم لفاطمة عليها الصلاة والسلام!)) قومي إلى أضحيتك فاشهديها فإن لك بأول قطرة تقطر من دمها يغفر لك ماسلف من ذنوب((، قالت: يارسول الله! هذا لنا أهل البيت خاصة أو لنا وللمسلمين عامة؟ قال:))لنا وللمسلمين عامة(( ( رواه الحاكم ৪/২২২ والبزار ২/ ৫৯ مع كشف الأستار )

আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাতেমা (রা:) কে বললেন, “(হে ফাতেমা!) তুমি তোমার কুরবানীর পশুর নিকট (যবেহ কালীন) দাঁড়াও এবং উপস্থিত থাক। কারণ তার প্রথম ফোটা খুন (জমিনে) পড়ার সাথে সাথে তোমার অতীতের গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে।” ফাতেমা (রা:) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এটা কি আমরা আহলুল বায়ত তথা নবী পরিবারের জন্যই খাস নাকি তা আমাদের জন্য এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য? তিনি (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমাদের জন্য এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য।” (হাকেম ৪/২২২) বাযযার ২/৫৯ কাশফুল আসতার,হাদীছটি যঈফ)

মুফতী মাহমুদ হাসান
*দারুল হাদীস (এম এ ইসলামিক স্টাডিজ) জামিয়াতুল আবরার বসুন্ধরা ঢাকা।
*দারুল ইফতা (ইসলামিক আইন ও গবেষণা বিভাগ) ঢাকা। 
*আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ (অনার্স) ঢাকা।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x