শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

জাবি ছাত্রলীগের কমিটিতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৩০

নিউজটি শেয়ার করুন

দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হতে যাচ্ছে। নতুন কমিটিতে নেতৃত্বের দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছে অছাত্ররা। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে রাজনৈতিক পরিপক্কতা বিবেচনায় অছাত্ররাই এগিয়ে রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ নিয়মিত ব্যাচ ৪৫। যেখানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এগিয়ে রয়েছে ৪২ ব্যাচ। এছাড়া ক্যাম্পাসের অন্যান্য ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের অধিকাংশে নেতৃত্বে দিচ্ছে ৪৫ ব্যাচ।

জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ৪২ ব্যাচ থেকে এগিয়ে আছেন- আকলিমা আখতার এশা, আক্তারুজ্জামান সোহেল, মাহবুবুল হক রাফা, আজিজুর রহমান লিলু, ইসমাঈল হোসেন, অভি তালুকদার, নীলাদ্রী শেখর মজুমদার ও রতন বিশ্বাস। ৪৩ ব্যাচ থেকে এগিয়ে রয়েছে আহমেদ আরিফ, এনামুল হক, আব্দুর রহমান ইফতি, আলম শেখ, হাফিজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান লিটন, রাকিবুল ইসলাম শাওন।

অন্যদিকে ৪৪ ব্যাচ থেকে সাজ্জাদ হোসেন, মাহফুজুর রহমান, ইমরান আহমেদ, আসাদুজ্জামান, লেলিন মাহবুব, রাশেদ আল নাঈম ও চিন্ময় সরকার এগিয়ে আছেন। তবে ৪৩ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নের্তৃত্বের জন্য চেষ্টা করলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পছন্দ ৪২তম ব্যাচ।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ‘মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্তিমিত ছিলো ছাত্রলীগের নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখাগুলোর কার্যক্রম যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নের্তৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এজন্য ছাত্রত্ব থাকা ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে নেতৃত্বের পরিপক্কতা আসেনি। এছাড়া করোনার শুরু থেকেই যারা জাবি ছাত্রলীগের নের্তৃত্বের জন্য দৌড়াচ্ছিল তাদেরকে বাদ দেওয়া কঠিন। তাদের পরিশ্রমকে আমরা অবমূল্যায়ন করতে পারি না।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ‘জাবি শাখার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যেকোন দিন কমিটি ঘোষণা হতে পারে। এক্ষেত্রে ১২ থেকে ২০ সদস্যের সুপার কমিটি হতে পারে।’

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ‘করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা ব্যহত হয়েছে। এর ফলে সেশনজট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শতভাগ আবাসনের নিজস্বতা হারিয়ে ফেলেছে জাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট থাকায় করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দেড় মাস পর ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের হলে তোলা হয়। এরপরেও তাদের জায়গা হয়েছে গণরুমে। এই পরিস্থিতিতে ৪২ ব্যাচ থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসলে চলমান আবাসন সংকট তীব্রতর হয়ে উঠবে। প্রশাসনের দাবি, ৪২ ও ৪৩ ব্যাচ থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসলে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট বৃদ্ধি পাবে এবং বিশৃঙ্খলা রোধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘করোনার পূর্বে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিলো শুধুমাত্র নিয়মিত ছাত্রদের হলে আবাসনের ব্যবস্থা করা। আমরা সেটা করার চেষ্টা করেছি। এখন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে অছাত্ররা আসলে কৃত্রিম আবাসন সংকট তৈরি হবে। বিশেষ করে ছাত্রদের হলগুলোতে। সেটা ভাববার বিষয়। কারণ সিনিয়র অছাত্ররা থাকলে জুনিয়র অছাত্ররাও থাকবে। প্রভোস্ট কমিটি এ নিয়ে আলোচনা করবে। এছাড়া সকল ছাত্রসংগঠনের সাথে প্রভোস্টবৃন্দ কথা বলবে।’

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রকে অনুরোধ করে থাকে। অছাত্র কিংবা সাবেক শিক্ষার্থী হলেও আমাদের যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এজন্য যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাবর্ষ এখনো রয়েছে তারাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসলে ভালো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের সুবিধা হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি তোমাদের মাধ্যমে আমার আহ্বান যেন নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসে। আমরা সব সময় বলেছি যারা ছাত্র নয় তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্বে না দিতে।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাবি ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তখন থেকে শুরু হয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দৌঁড়ঝাপ।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x