রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে ৩১২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ খেলাপির দায়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাকসুদুর রহমানের পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। আদেশের কপি পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বুধবার শুনানি শেষে এ আদেশ জারি করেন চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালত।
তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুছ ছালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, জনতা ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি মাত্র কয়েকটি শিল্প গ্রুপের কাছে। এর মধ্যে থার্মেক্স, ক্রিসেন্ট, এননটেক্স ও আরএসআরএম গ্রুপের খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতা দরকার। মাত্র চারটি গ্রুপের ঋণ নিয়মিত হলে জনতা ব্যাংকের কোনো পিছুটান থাকবে না।
আদালত সূত্র জানায়, খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ মাকসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে জনতা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা। ওই শাখায় ৩১২ কোটি ৮২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ঋণ খেলাপি আরএসআরএম। তবে ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় জামানত অত্যন্ত নগণ্য।
মামলা দায়েরের পর বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ সম্পূর্ণ অনাদায়ী থাকা সত্ত্বেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংক যত্নশীল ছিল না। সাড়ে তিন বছর পর বিষয়টি আদালতের নজরে এলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে সমন জারি করা হয়। একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের এ রকম নিষ্ক্রিয়তা গ্রাহকদের খেলাপিপ্রবণ করে তুলছে, যা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
আদালত জানান, স্বীকৃত মতে বিবাদী (মাকসুদুর রহমান) একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি। কারণ ২০১৯ সালে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করার সুযোগ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সুযোগে ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন অনেক খেলাপি। কিন্তু সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও তা গ্রহণ করেননি বিবাদীরা।