শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

দৌলতপুর স্কুলের বাউন্ডারি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে স্থানীয় সরকার বিভাগের কয়েকটি স্কুলের বাউন্ডারী নির্মাণে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সব স্কুলের বাউন্ডারীতে প্রয়োজনের তুলনায় কম উপকরন ব্যবহার ও নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট ব্যবহার করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অপরদিকে স্কুলে নিম্নমাণের ইট ও প্রয়োজনের তুলনায় কম উপকরন ব্যবহার করার প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের।

সিডিউল অনুযায়ী এলজিইডি দৌলতপুর এর তথ্য মতে জানা যায়, উপজেলার শীতলাইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী নির্মানে ২২,৭৪,৮০০/= টাকা, মথুরাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী নির্মানে ১৮,৯৩,৪১১/= টাকা এবং ফিলিপনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী নির্মানে ১৩,৫১,৭৯৬/= টাকা ব্যায় কাজ পায় ঠিকাদার মাহাবুব। ইতিমধ্যে এসকল স্কুলের মধ্যে শীতলাইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, বালি, সিমেন্ট ব্যবহার সহ সিডিউলের চেয়ে উপকরন কম ব্যবহার করা হয়েছে।

স্কুলের বাউন্ডারী নির্মান কাজ করার সময় শীতলাইপাড়া এলাকার এলাকাবাসী ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু কাজ বন্ধ করে দিতে চাইলে সম্প্রতি উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দার ঘটনাস্থলে গিয়ে বাউন্ডারী নির্মানে অনিয়ম সহ নানা গড়মিল ধরেন। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারনে উপজেলা প্রকৌশলী কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ঠিকাদর মাহাবুব (মাহাবুব মাষ্টার) কে স্কুলের বাউন্ডারী নির্মানের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন বলে এলাকাবাসী জানান। এছাড়াও এলাকাবাসী জানায়, এ ব্যাপারে একাধিকবার ঠিকাদারকে বলা হলেও ঠিকাদার মাহাবুব, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (এটিও) বখতিয়ার হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার কোন কর্নপাত করেননি।

এলাকাবাসী আরোও জানায়, এসকল স্কুলের বাউন্ডারী নির্মান কাজের সাথে স্থানীয় এমপি‘র ছোট ভাই নাম পরিচয় দানকারী মাহাবুব (মাহাবুব মাষ্টার) ও উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজস রয়েছে। যে কারণে উক্ত কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। কাজের অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার মাহাবুবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি কোন অনিয়ম করিনি, তবে কিছু খারাপ ইট ভুল করে চলে এসেছে। খারাপ ইট গুলো সরিয়ে নিয়ে যাব। তিনি আরো বলেন, আপনি কাজের স্থানে কেন গিয়েছেন? তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবেই চলছে এবং এ ব্যাপারটা নিয়ে যেন কোন নিউজ না করা হয়। এ বিষয়েও তিনি প্রতিবেদককে সতর্ক করেন।

বিষয়টি নিয়ে শীতলাইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু জানান, ঠিকাদার মাহাবুবকে নিম্নমানের উপকরন ব্যবহার করতে নিষেধ করায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা বলতে নিষেধ করেন। তিনি আরোও করে বলেন, কাজ শেষ পর্যায়ে আসার পরেও আমাকে কাজের কোন সিডিউল দেখানো হয়নি।

অন্যদিকে নিম্নমানের কাজের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দ্দারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি নিজেকে ধোয়া তুলশীপাতা হিসেবে জাহের করে বলেন, ঠিকাদার মাহাবুবের উপর আমি নিজেই চরমভাবে বিরক্ত। তার কাজের গতি কম। স্কুলের বাউন্ডারী নির্মানে নিম্নমানের উপকরন ব্যবহার করার বিষয়ে কিছু জানেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই তবে যদি সত্য হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, উপজেলা প্রকৌশলীকে উন্নয়ন মুলক কাজে কোন দুর্নীতি বা গাফিলতি না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, শুধু স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের অনিয়মের বিষয়টিই নয়, প্রতিটা কাজের দুর্নীতির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল এর বক্তব্য নিতে গেলে তারা বলেন, দুর্নীতি পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এটা তাদের একটি রেডিমেড ভাষা প্রতিটা ইঞ্জিনিয়ারই এই কথাগুলো বলে থাকেন। পরবর্তীতে দেখা গেছে অনিমের মধ্যেই কাজ হয়ে বিল উত্তোলন করে ঠিকাদার ঘরে উঠে গেছে। কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না প্রকৌশলীরা। এটাই আমাদের বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের নীতিবাক্য। পকেট ভরে গেলে সবকিছু বেমালুম ভুলে যান তারা।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x