বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার আজও বাস্তবায়ন হয়নি

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের যে অঙ্গীকার ছিল তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ যে ভিত্তির উপরে সংগঠিত হয়েছিল, সে সকল বিষয়গুলো আজ চরমভাবে উপেক্ষিত। সাম্যের বিপরীতে বেড়েছে বৈষম্য, দিন দিন ঘটছে মানবিকতার চরম অবক্ষয় এবং সামাজিক ন্যায় বিচারের পরিবর্তে সর্বত্র বিচারহীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ৭২’ সালে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করা হয়। ইসলামী শিক্ষাকে তুলে তুলে দেয়ার চেষ্টায় ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী মতবাদ নতুনভাবে সংযোজন করা হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতি ন্যায় পাবে না বলে দেশ ত্যাগ করেন। এটা দেশের জন্য চরম লজ্জাকর বিষয়। তিনি বলেন, ৩১ মার্চের জাতীয় মহাসমাবেশ নিয়ে কোন টালবাহানা করলে তার পরিণতি ভাল হবে না। যেখানে বাধা হবে সেখানেই সমাবেশ হবে। কাজেই বিখৃঙ্খলার দিকে না নিয়ে মহাসমাবেশের অনুমতি দিয়ে সরকারের শুভবুদ্ধির পরিচয় দিবে।

গতকাল শনিবার, বিকেলে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মিলনায়তনে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত “স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন”- শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, ডা. শহিদুল ইসলাম, নূরুল ইসলাম নাঈম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।

মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, সম্প্রতি প্রকাশিত অ্যালকোহল বিধিমালা দেশবাসীর জন্য চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। বিধিমালার মাধ্যমে চরিত্র বিধ্বংসী ও হারাম মদ-কে পারমিটের মাধ্যমে সহজলভ্য করা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের দেশে এজাতীয় বিধিমালা প্রণয়ন চরম হতাশার ও ঘৃণার। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী একটি গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রার নামে দেশটাকে নর্তকি ও নষ্টামির সাগরে ডুবিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ঘটনা গুলো থেকে স্পষ্ট হয় স্বাধীনতা পরবর্তী সকল শাসকশ্রেণীর নেতাকর্মী ও সংস্কৃতিকর্মীদের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত। অনেকেই মাদক আইনের আসামী। তাদের বাঁচাতেই সরকার তড়িঘড়ি ও লুকোচুরি করে অ্যালকোহল বিধিমালা জারী করেছে কিনা তা আজ জনমনে প্রশ্নের দাগ কেটেছে। স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবর রহমান নিজেই মাদক দ্রব্যের ব্যাপারে কঠোর ছিলেন, সেখানে উনার কন্যা এখন সরকার প্রধান হয়ে মদের মত হারাম মাদককে সহজলভ্য করে কিভাবে! এটা জাতীর বোধগম্য নয়। অবিলম্বে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাতিল করে মদ সহ সকল প্রকার মাদক দ্রব্যের ব্যাপারে কঠোর আইনের মাধ্যমে আমদানী, সরবরাহ ও বিক্রয় বন্ধ করতে হবে।

অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন; লাখো শহীদের ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছিলো ভোটাধিকারের প্রশ্নে। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলার মানুষ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের স্বাধীনতাকে ছিনতাই করা হয়েছে। যার কারণে সভা-সমাবেশ এমনকি ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলের অনুমতির জন্যও দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। তিনি ৩১ মার্চের জাতীয় মহাসমাবেশের অনুমতি নিয়ে টালবাহানা করলে সারাদেশ মহাসমাবেশে পরিণত হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, স্বাধীনতার মূল ভিত্তি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে জাতিকে বিভ্রাšত্ম করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষণায় ধর্মনিরেপক্ষতার কথা ছিলনা। পরে ভারতের সংবিধানের সাথে মিল রেখে ৭২ সালে ধর্মনিরপেড়্গতাকে সংযোজন করা হয়। ভারতে মদ সাধারণ করে দেয়ায় ভারতের সাথে মিল রেখে এদেশেও মদকে সাধারণ করে দেয়ার জন্য ২১ বছর বয়সীদের মদের লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধাšত্ম নেয়া হচ্ছে। এ পথ থেকে ফিরে না আসলে দেশময় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলম বলেন, উন্নয়নের জোয়ারে দেশ ভাসানো সাইনবোর্ড বাদ দিয়ে নেতাকর্মীদের জনবান্ধন করে তুলুন। আওয়ামী সরকার আজ জনবিচ্ছিন্ন। প্রশাসনকে দলীয় স্বার্থে আর কত ব্যবহার করবেন? প্রশাসনকে জনগণের হয়ে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করম্নন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় আপনাদের বিদায় ও পরিণাম হয়তো কল্পনার চাইতেও ভয়াবহ হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বর্তমানে দেশে চরম অরাজকতা চলছে। ক্ষমতাসীন দল পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে দিনের ভোট রাতেই সম্পন্ন করে দিনের আলোয় ঘোষণা দিয়ে পুনঃক্ষমতাসীন হয়েছে। জনগণের অধিকার হরণ করে অবৈধ পন্থায় ও গায়ের জোরে ক্ষমতাসীন হওয়ায় দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উদাসীন। এ সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক কোনো অধিকার নেই।

সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আহুত আগামী ৩১ মার্চের জাতীয় মহাসমাবেশ সফল করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x