শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন

জেব্রা প্রিন্ট পর্দা- দূর করবে মশা

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে মানুষকে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে ‘প্রজেক্ট মসব্লক’। দরিদ্রদের মাঝে জেব্রার গায়ের রং সাদা-কালো সদৃশ এক বিশেষ পর্দা বা কাপড় বিতরণের মাধ্যমে এ পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে বিশেষ করে দরিদ্ররা মশাবাহিত রোগ থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।

সম্প্রতি রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে দিনব্যাপী পাইলট প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বস্তিবাসীদের মধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক বিশেষ ধরণের পর্দা বিতরণ করা হয়। আকাশ ডিজিটাল টিভি ও গ্রে অ্যাডভারটাইজিং বাংলাদেশ লিমিটেড এর সহযোগিতায় শিগগিরই প্রকল্পের ফলাফল পাওয়ার পর এর কার্যকারিতা নিরূপণ করা সম্ভব হবে।

ডব্লিউএইচও- এর গবেষণা অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১০-৪০ কোটি মানুষ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়। যেসব দেশ ডেঙ্গুর সর্বাধিক সংক্রমণ তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কোভিডের কারণে এ রোগ আরও প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য সাম্প্রতিককালে এটি আরো ভয়ংকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারাদেশে ২৮ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা গেছেন ১০৫ জন। চলতি বছরেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর এসেছে।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মশাবাহিত রোগের অন্যতম কারণ দরিদ্র মানুষ ভালো মানের মশা প্রতিরোধক পণ্য কিনতে পারে না। আর বাজারে যেসব প্রতিরোধক পণ্য মানে মশা মারার কয়েল, স্প্রে পাওয়া যায় তা তাদের বিশেষত শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়াও মশা দিনে কাঁমড়ায় না, রোদে মশা আসে না ইত্যাদি কুসংস্কারে আচ্ছন্ন তারা।

মসব্লক অর্থাৎ জেব্রা প্রিন্টের এই পর্দা কীভাবে মশার হাত থেকে রক্ষা করবে-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানান- ‘সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে একমাত্র জেব্রা এমন একটি প্রাণী, যার গায়ে মশা মাছি বসে না। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষকরা আবিষ্কার করেন যে, জেব্রার গায়ে সাদাকালো ডোরাকাটা দাগ মশার পুন্জাক্ষী চোখ (কম্পাউন্ড আইস)-এ অস্তিত্ব তৈরি করে। যার ফলে মশা জেব্রার গায়ে গিয়ে বসতে পারেনা। বহু আদিবাসী ঠিক এ কারণে তাদের মুখে এবং গায়ে সাদা দাগ এঁকে রাখেন। আমরা হয়তো অনেকেই জিনিসটাকে সেভাবে খেয়াল করিনা।

ওই কর্মকর্তা জানান, আমাদের ভাবনা ছিল, আমরা যদি জেব্রা প্রিন্টের পর্দা ঘরের জানালা এবং দরজায় লাগিয়ে দিতে পারি, তাহলে মশা ঘরেও ঢুকতে পারবে না। অভিনব এই পর্দা শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বের মশার সমস্যা দূর করতে সক্ষম বলে বিশ্বাস করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

মসব্লক পর্দা তাদের জীবনে কী রকম প্রভাব ফেলতে পারে? এমন প্রশ্নে কড়াইল বস্তির সুহানা বলেন, আমাদের এখানে মশার খুব উৎপাত। মশার কয়েল জ্বালালে বাচ্চাদের কাশি হয়। তাই সবসময় কয়েল জ্বালানো যায় না। রাতে মশারিতে কিছুটা আরাম হলেও সারাদিন খুবই যন্ত্রণার মধ্যে কাটে। মশার কামড়ে সারা গায়ে ঘায়ের মতো হয়ে যায়। ডেঙ্গু জ্বর হয়। ঘরে এই পর্দা লাগানোর পরে এখন অনেক ভালো আছি। মশার উপদ্রব অনেক কমেছে। বাচ্চারা শান্তিতে ঘরে পড়াশোনা-খেলাধুলা করতে পারে। আমরা নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারি।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x