শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৫ অপরাহ্ন

খালেদা জিয়ার কোনো অঘটন ঘটলে পরিণতি কঠিন হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

খালেদা জিয়ার কোনো অঘটন ঘটলে পরিণতি কঠিন হবে হুশিয়ারি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রো্ববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই হু্শিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমি বলতে চাই, সরকারকেই দায় নিতে হবে। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আল্লাহ না করুক যদি কোনরকম অঘটন ঘটে তাহলে এদেশের মানুষ আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না। টেনে হিঁচড়ে আপনাদেরকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেবে।”

‘‘ আমি শুধু পরিস্কার বলতে চাই যে, আমাদের শেষ কথা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য বিদেশে পাঠান। অন্যাথায় তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে। ”

খালেদা জিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিতসাধীন আছেন। গতকাল তার হৃদপিন্ডে একটি ব্লক অপসারণ করে স্টেন্ট বসানো হয়েছে।

মহানগর উত্তর-দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিতসার দ্রুত বিদেশে প্রেরণ ও তার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশে হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ব্যানার-ফেষ্টুন নিয়ে সমাবেশে আসে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ কেনো দেশনেত্রীকে আটক রাখা হয়েছে, কেনো তাকে চিকিতসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না? যখন তাদের(সরকার) সলিম উদ্দিন-কলিম উদ্দিন সব বিদেশে গিয়ে চিকিতসা করে, সাজাপ্রাপ্ত লোকরা বিদেশে গিয়ে চিকিতসা করে, কেউ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যায়। তখন বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় নেতা গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন উতসর্গ করেছেন তাকে বিদেশে চিকিতসা করতে দেয়া হয় না কেনো?”

‘‘ কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) হচ্ছেন এই ফ্যাসিবাদী সরকারের, এই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভয়। দেশনেত্রী যদি বেরিয়ে আসেন, তিনি যদি রাস্তায় নামেন, তিনি যদি মানুষকে ডাক দেন, সেই ডাকে ব্যাভিলনের সেই বংশীবাদকের মতো সব বেরিয়ে আসে রাস্তার মধ্যে….। সেজন্য তারা(সরকার) তাকে আটকিয়ে রেখেছে।”

মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার তাকে আটকিয়ে রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘ মূল কারণ হচ্ছে তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। এই্ ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি অত্যন্ত পরিকল্পিতভা বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেন, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে, দুদককে নিয়ন্ত্রণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছেন।”

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমাদের চিকিতসকদের অত্যন্ত সময়োচিত পদক্ষেপের এবং চিকিতসার কারণে অতিদ্রুত স্টেন্টিং করে তার আজকে লাইফ সেইভ করা হয়েছে। এটাই তার শেষ না। তার অনেক অসুখ আছে। লিভার সিরোসিস আছে, আর্থ্রাইটিস আছে, হার্ট ডিজিস আছে, কিডনি ডিজিস। এর জন্য দরকার উন্নত চিকিতসা কেন্দ্র। সেটা আমাদের দেশে নেই।”

‘‘ ডাক্তারা বলেছেন, তাকে উন্নত মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া দরকার যেটা বিদেশে আছে। সেজন্য আজকের এই প্রতিবাদ সভা। আমরা বার বার সরকারকে অনুরোধ করেছি, আন্দোলন করেছি, কর্মসূচি দিয়েছে। এখন সোজা কথায় বলতে চাই, কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, সরকার কোনো দায় নেবে না। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, সরকারকেই দায় নিতে হবে।”

‘কারো কাছে আমি মাথানত করিনি’-প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য খন্ডন করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এরশাদ সাহেব ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ যথন ক্ষমতা দখল তখন উনি(শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, উই আর নট আনহ্যাপী, আমরা অখুশি নই। আবার ১/১১ যখন অবৈধ সেনা সমর্থিত সরকার হলো তখন আপনি এয়ারপোর্টে ঘোষণা দিয়েছিলেন এই অবৈধ সরকারের সব অবৈধ কাজকে বৈধ করে দেবেন।”

‘‘ আমাদের ম্যামোরি এখনো সট হয়নি।সেই জন্য আমরা বলি যে, আপনারা বরাবরই আতাঁত করে ক্ষমতায় এসেছেন, আপনারা বরাবরই ওই শক্তির সঙ্গে আতাঁত করেছেন যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করে, যারা বরাবরই গণতন্ত্রকে ধবংস করে।”

বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে উল্লেখ করে আন্দোলনের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।

মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির মীর মোহাম্মদ নাসির, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, তানভীর আহমেদ রবিন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আরিফা সুলতানা রুমা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে মোরতাজুল করীম বাদরু, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, মুনায়েম মুন্না, মামুন হাসান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মীর নেওয়াজ আলীসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x