শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন

‘সিন্ডিকেট’ দ্বারা ডিমের দাম বাড়ানো হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

সরকার যদি ভবিষ্যতে হঠাৎ ডিমের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে চায়, তাহলে পরিবহণ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে ডিজেলের দাম বাড়াতে চাইলে অবশ্যই কিছুদিন আগে তা ঘোষণা করা উচিত। যাতে করে ডিজেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হওয়ার আগে, ট্রাক মালিকরা তাঁদের ভাড়া পূননির্ধারণ করার সময় পায়। সম্প্রতি কেউ কেউ দাবী করেছেন, কোনো একটি মূল্য-নির্ধারণকারী “সিন্ডিকেট” দ্বারা ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছিল এবং সরকারি সংস্থাগুলো পাইকারি ডিমের বাজার পরিদর্শন করে, উচ্চ মূল্যে ডিম বিক্রি করায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা করার পরেই পাইকারী দামটা কমে আসে, এই দাবীটা ঠিক নয়। আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটা দাবি করেছেন কাজী ফার্মস কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সে সময় (টিমের দাম বৃদ্ধি) কী ঘটেছিলো? ডিজেলের দাম বাড়ানোর পরপরই ডিম ব্যবসায়ী ট্রাক ভাড়া করতে সমস্যার সন্মুখীন হয়েছেন। ডিজেলের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কয়েকদিন ট্রাক চলাচল অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। ব্যবসায়ীরা সাধারণত প্রতিদিন প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামার থেকে শহরের গুদামে ডিম নিয়ে আসেন। সে সময় ট্রাক ভাড়া না পাওয়ায়, শহরের আড়তগুলোতে ডিম সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। যার কারনে ডিমের ঘাটতি দেখা দেয়। আর এই ঘাটতির কারণে, শহরের বাজারে ডিমের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। এর কিছুদিন পরেই ট্রাক চলাচল যখন স্বাভাবিক হয়ে আসে, তখন আবার ডিমের সরবরাহ শুরু হয় এবং ডিমের দাম কমে আসে।

অভিযোগ এসেছে যে, তেজগাঁওয়ে ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে অথবা অন্য পোল্ট্রি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিলে কাজী ফার্মস ডিমের দাম বাড়িয়েছেন, এই অভিযোগও সত্য নয়। কাজী ফার্মের বিভিন্ন জেলার ডিম বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ লাখ ডিম বিক্রি হয়। এই ডিমগুলো বিক্রয় কেন্দ্র থেকে নিলাম পদ্ধতিতে বিক্রি হয়ে থাকে।

উদাহরণস্বরুপ ধরা যায়, একটি নির্দিষ্ট দিনে আমাদের আশুলিয়ার বিক্রয় কেন্দ্রে বিক্রির জন্য ৬ লাখ ডিম আছে। আমাদের বিক্রয়কর্মীরা নিয়মিত গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং তারা খুঁজে বের করে অন্যান্য বিক্রেতারা কোন দামে ডিম বিক্রি করছে। এর ওপর ভিত্তি করে, প্রথমে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে প্রস্তাবিত নুণ্যতম মূল্য নিয়ে আলোচনা করি, যা সেই দিনের প্রত্যাশিত বিক্রয় মূল্যের চেয়ে কম। ধরুন প্রাথমিকভাবে আমাদের প্রতিটি ডিমের প্রস্তাবিত নুণ্যতম মূল্য ১০ টাকা নির্ধারণ করি।

প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা প্রস্তাবিত নুণ্যতম মূল্য দেয়ার পর, পরিবেশকরা তাদের মূল্য প্রস্তাব করেন। একইসঙ্গে তাঁরা কতগুলো ডিম চায়, তা জানান।

ধরা যাক, আমরা নিম্নলিখিত নিলাম মূল্যগুলো পেয়েছি: ‘ক’ ১ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১১.০০ টাকা প্রস্তাব করেন।‘খ’ ২ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১০.৩০ টাকা প্রস্তাব করেন। ‘গ’ ১ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১০.২৫ টাকা প্রস্তাব করেন।‘ঘ’ ২ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১০.২০ টাকা প্রস্তাব করেন। ‘ঙ’ ২ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১০.১৫ টাকা প্রস্তাব করেন। ‘চ’ ২ লাখ ডিমের জন্য প্রতিটি ডিমের দাম ১০.১০ টাকা প্রস্তাব করেন।

যেহেতু আমাদের ৬ লাখ ডিম বিক্রি করতে হবে, তাই ওইদিনের জন্য আমরা আমাদের ডিমের বিক্রি মূল্য নির্ধারণ করবো প্রতিটি ১০.২০ টাকা হারে। সেই মূল্যে চারজন সর্বোচ্চ দরদাতা যেমন ক, খ, গ, এবং ঘ যে পরিমাণ ডিম চেয়েছেন তা কিনবেন প্রতিটি ডিম ১০.২০ টাকা হারে এবং আমাদের ৬ লাখ ডিম পুরোটাই বিক্রি হয়ে যাবে এবং এই কারণে ঙ এবং চ সেদিন আমাদের কাছ থেকে কোন ডিম পাবেন না।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে পরিবেশকদের কাছে আমাদের বিক্রয় মূল্য, পরিবেশকদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তবিত মূল্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। আমাদের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণের জন্য অন্য কোন বিক্রেতার সাথে যোগসাজেস করার কোনো প্রশ্ন আসে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৪ কোটি ডিম বিক্রি হয়। দেশের সব বড় পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো মিলে প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ ডিম বিক্রি করে, যা প্রতিদিন বিক্রি হওয়া ডিমের মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ, পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো চাইলেই ডিমের দাম বাড়াতে পারে না। পোল্ট্রি কোম্পানিগুলোর যোগসাজশের কোনো সুযোগও নেই। এমনকি, তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী সমিতিও এককভাবে ডিমের দাম বাড়াতে পারে না। কারণ তাঁরাও প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ ডিম বিক্রি করেন যা মোট বিক্রি হওয়া ডিমের মাত্র ১০ শতাংশ।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x