আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সুস্থ হলে বাকি সাজা খাটতে তাকে জেলে যেতে হবে। তিনি অসুস্থ, তাই তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তিনি দণ্ডিত, তাই দেশের বাইরে সুযোগ তার নাই।
রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন আইনমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্ট বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ল রিপোর্টার্স ফোরাম’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, এখন তিনি (খালেদা জিয়া) যদি বলেন যে, তিনি সুস্থ, তাহলে বাকি সাজা খাটার জন্য তাকে জেলে যেতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। যে মুহূর্তে তিনি বলবেন যে তিনি সুস্থ, সে মুহুর্ত থেকে অসুস্থতার যুক্তিতে তার সাজা স্থগিতের আবেদনের কার্যকারীতা আর থাকবে না।
সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অংশগ্রহনের বিষয়ে এক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৬২ অনুচ্ছেদ অনুসারে খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার কোন সুযোগ নেই। কারণ তার নৈতিক স্খলন হয়েছে। তিনি দণ্ডিত। তাছাড়া দণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যে খালেদা জিয়ার আপিল সেখানে সাজা স্থগিতের কোনো আবেদন আমার জানামতে ছিল না।
তারেক রহমানের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, তারেক রহমান দণ্ডিত এবং পলাতক। তিনি তার বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিলই করেননি। ফলে দণ্ডিত পলাতক আসামির পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
দশবছর পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামির সমাবেশ নিয়ে এক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমাবেশের অনুমতি দিয়ে থাকে। উনারা কী বিবেচনায় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছেন, সে প্রশ্নটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে করলে ভাল হবে।
দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতকে দোষী বলা যাবে না
জামায়াতের বিচার নিয়ে আনিসুল হক বলেন, দল হিসেবে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধে বিচার করার জন্য আইন সংশোধন করার কথা আমি আগে বলেছি, সেই প্রক্রিয়া চলমান। কিছু দিনের মধ্যে কেবিনেটে যাবে। আর বিচার করার পরে যতক্ষণ পর্যন্ত না রায় হয়, দোষী সাব্যস্ত করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তো আমি বলতে পারব না যে জামায়াত দোষী। আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে বিচার করেছি সেখানে থেকে যে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, দেখা গেছে যে জামায়তকে দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধে বিচার করার জন্য যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে। কিন্তু বিচারের পর বলা যাবে তারা দোষী কি না।
আমেরকিার ভিসানীতিতে অপমানিত হয়েছি
আমেরকিার ভিসানীতিতে বিচার বিভাগকে জড়িয়ে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে তা অপমানজনক বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, যখন আমার সঙ্গে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, এই ভিসানীতির কারণে আমরা কিন্তু অপমানিত হয়েছি।
আইনমন্ত্রী বলেন, এটা যদি তারা সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যদি এক তরফা একটি দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তাহলে অবশ্যই আমাদের এই ব্যাপারে আপত্তি আছে। এখানে বিচার বিভাগকে কেন টেনে আনা হলো সেটা স্পষ্টিকরণের জন্য বলেছি।
এলআরএফ’র সভাপতি আশুতোষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিট দ্য প্রেসে আরো উপস্থিত ছিলেন, আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা। অনুস্ঠান সঞ্চালনা করেন এলআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সরোয়ার হোসেন ভূঁঞা।