শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে ঢাকায় জলাবদ্ধতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪
  • ২৮

নিউজটি শেয়ার করুন

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলমান বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। কর্মদিবসে এমন বৃষ্টিতে সরকারি-বেসরকারিসহ কর্মজীবী মানুষের বাসা থেকে বের হওয়া বাধাগ্রস্থ হয় জলাবদ্ধতায়। অফিসগামী মানুষ সীমাহীন কষ্টে বৃষ্টি বিড়ম্বনার মধ্যেই ভিজে অফিসে যান।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। দুপুর ১টার দিকে ভাটারা সোলমাইদ সড়কে হাটুর নিচ পর্যন্ত পানি জমতে দেখা গেলেও এক ঘন্টার ব্যবধানে পানি বেড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকার প্রধান সড়কে পানি জমেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সড়কটি দিয়ে চলাচল করা মানুষ। ভাটারা বাজারের দোকানী লোকমান হোসেন বলেন, মার্কেটের সামনে পানি। ভেতরেও পানি চলে এসেছে। কাস্টমার আসার উপায় নেই। সকালে দোকান খুলছি এখন পর্যন্ত একজন কাস্টমারও পাই নাই।’
সোলমাইদ ছাপড়া মসজিদের সামনে পানি জমে সকাল থেকেই। দেখা যায়, মসজিদের সামনের বাজারেও পানি উঠেছে। সবজি বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। রহিম নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, সকাল থেকেই কাস্টমার কম। এমন জানলে বৃষ্টিতে ভিজে কষ্ট করে মাল কিনতেই যেতাম না। এখন বসে আছি কি আর করা?।’

নিউমার্কেটসহ রাজধানীর আরও অনেক সড়কে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। দুুপুরে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় যায়, বৃষ্টিতে অনেক দোকানপাট বন্ধ। মার্কেটের যেসব দোকান খোলা সেগুলোতেও ক্রেতা নেই। অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। রাজধানীর নিউমার্কেট সংলগ্ন নূরজাহান মার্কেট ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের সামনে পানি জমে আছে। এছাড়া চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার সড়কে পানি জমে আছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও চরমে।

এদিকে রাত থেকে পড়া বৃষ্টিতে মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় জমে থাকা পানি সরাতে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা। বিশেষ করে কাজীপাড়ার মেট্রোরেলের নিচে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেই পানি বের করার জন্য দুপুর পর্যন্ত চেষ্টা করেছে ডিএনসিসি কুইক রেসফন্স টিম। মিরপুর ৬০ ফিট সড়কের পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

বৃষ্টির কারণে সড়কে যানবাহন অনেক কম দেখা গেছে। সকালে কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে বেরিয়ে অনেকেই রাস্তায় বাস পাননি। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চালকেরা বৃষ্টির কারণে বাড়তি ভাড়া চেয়েছেন। কোনো কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতার শঙ্কা থাকায় অটোরিকশা চালকেরা যেতে রাজি হননি। অনেকে গণপরিবহনের অপেক্ষায় থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে ভিজে গেছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাসের কারণে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় গাছও ভেঙে পড়েছে। মিরপুর পাইকপাড়া এলাকায় সরকারি ডি টাইপ কোয়ার্টার এলাকায় বড় আকারের একটি কৃষ্ণচূড়াগাছ ঝড়ে ভেঙে গেছে। এ সময় ওই এলাকার চলাচলের সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।

সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচলে বিঘ্ন দেখা দেয়। সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সকাল ১০টা ৮ মিনিটের দিকে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে একটি মেট্রোরেল ছাড়ে। তবে সেটি চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। অনেকে স্টেশন থেকে ফিরে যান।

জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে ডিএনসিসির কুইক রেসপন্স টিম:
দেশের উপকূলীয় এলাকায় হানা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীতেও। রবিবার (২৬ মে) দিবাগত রাত থেকেই ঢাকায় ভারি ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আর শহরের এই জলাবদ্ধতা দূর করতে কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কুইক রেসপন্স টিম। সোমবার রাজধানীর ডিএনসিসির কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যেসব স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে পিকআপ নিয়ে ছুটে যাচ্ছে কুইক রেসপন্স টিম। সঙ্গে রয়েছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।

ডিএনসিসি জানায়, আওতাধীন ১০ জোনের জন্য ১০টি রেসপন্স টিম ঠিক করা আছে। এছাড়া জরুরি সেবা লাইনে ১৬১০৬ নম্বরে ফোন আসা মাত্রই ছুটে যাচ্ছে এই টিম।

জরুরি সেবা ১৬১০৬ নম্বরেও রাজধানীবাসীর ফোন আসা মাত্রই কুইক রেসপন্স টিম ছুটে যাচ্ছে জানিয়ে মকবুল হোসাইন বলেন, ‘জরুরি সেবার মাধ্যমে উত্তরা জসিমউদ্দীন রোড ও মিরপুর ১৩ এই দুই জায়গা থেকে সড়কের ওপর গাছ পড়ে থাকার খবর জানানো মাত্রই আমাদের টিম ছুটে গিয়ে গাছ সরিয়েছে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিয়েও ফোন এসেছে বেশ কয়েকটি। আমরা সমাধান করেছি। আমাদের এই জরুরি সেবা সেলটি আজ বিশেষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x