বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন

শ্রীলঙ্কায় আদানির প্রকল্পে ৫৫৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীলঙ্কার কলম্বো ওয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল প্রাইভেট লিমিটেডকে (সিডব্লিউআইটি) অর্থায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন (ডিএফসি)। এ অর্থায়নের পরিমাণ হবে ৫৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি ভারতের বৃহত্তম বন্দর অপারেটর আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড (স্পেশাল ইকনোমিক জোন) লিমিটেড এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া শ্রীলঙ্কার শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান জন কিলস হোল্ডিংস (জেকেএইচ) এবং শ্রীলঙ্কা পোর্টস অথরিটিকেও অর্থায়ন করবে বলে জানিয়েছে ডিএফসি।

মার্কিন সরকারের একটি উন্নয়নমূলক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হলো ডিএফসি। উন্নয়নশীল বিশ্ব যে সকল জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, তা সমাধানে অর্থায়নের জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান। এটি বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্যসেবা, অবকাঠামো, কৃষি ও ছোট ব্যবসা এবং আর্থিক পরিষেবা সহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে।

এই প্রথম মার্কিন সরকার তার একটি এজেন্সির মাধ্যমে আদানির কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এ অর্থায়ন কলম্বো বন্দরে একটি বিশ্বমানের কনটেইনার সুবিধা তৈরির জন্য আদানি গ্রুপের বিনিয়োগের সক্ষমতার প্রতি তাদের আস্থা প্রদর্শন করে।

আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনোমিক জোন (এপিএসইজেড) এর হোল টাইম ডিরেক্টর ও সিইও কারান আদানি বলেন, “আদানি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য আমরা মার্কিন সরকারের উন্নয়ন অর্থ সংস্থা ‘ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন’কে (ডিএফসি) স্বাগত জানাই। এটিকে আমরা আমাদের লক্ষ্য, সক্ষমতা ও পরিচালনা পদ্ধতির আন্তর্জাতিক পুনর্নিশ্চিতকরণ হিসেবেই দেখছি।’’ তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বন্দর ডেভেলপার ও অপারেটর হিসেবে, এপিএসইজেড- এর এই প্রকল্পটি শুধু আমাদের বিশ্বমানের দক্ষতাই নয়, বরং অবকাঠামোগত নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের গভীর অভিজ্ঞতারও প্রমাণ দেয়। কলম্বো ওয়েস্ট ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে, এটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং শ্রীলঙ্কার ব্যবসা-বাণিজ্যের ইকোসিস্টেমকে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির মাধ্যমে শুধু কলম্বোই নয়, পুরো দ্বীপের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিকেই পাল্টে দেবে।”

ভারত মহাসাগরের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হলো কলম্বো বন্দর। ২০২১ সাল থেকে ৯০ শতাংশেরও বেশি কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এ বন্দর। নতুন টার্মিনালটি প্রধান শিপিং রুটে শ্রীলঙ্কার মূল অবস্থান এবং সম্প্রসারিত বাজারের নৈকট্যের সুবিধা গ্রহণ করার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির ব্যবস্থা করবে।

ডিএফসি সিইও স্কট নাথান বলেন, “ডিএফসি আমাদের সহযোগীদের কৌশলগত অবস্থানকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করতে কাজ করে, যাতে তারা উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে পারে। কলম্বো বন্দরে অবকাঠামোগত বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা এটাই করছি। শ্রীলঙ্কা বিশ্বের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট হাব, সমস্ত কন্টেইনার জাহাজের অর্ধেক এ পথে চলাচল করে থাকে। ওয়েস্ট কন্টেইনার টার্মিনালের জন্য ডিএফসি’র এ ৫৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ, শ্রীলঙ্কায় বৃহত্তর ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির মাধ্যমে এর শিপিং ক্ষমতাকে প্রসারিত করবে। পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে ঋণের বোঝা ভারী না করেই সমগ্র অঞ্চলে আমাদের সহযোগীদের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।”

শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং বলেন, “কলম্বোর ওয়েস্ট কন্টেইনার টার্মিনাল পোর্টের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য ডিএফসি’র ৫৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ, শ্রীলঙ্কায় বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধিকে সহজতর করবে এবং এর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহকে আগ্রহী করবে৷ শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থার পুনরুদ্ধার একটি মুক্ত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনের জন্য আমাদের যৌথ লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

আদানি গ্রুপ উদীয়মান বাজারে কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এর পরিধি প্রসারিত করছে। ট্রান্সপোর্ট লজিস্টিকস এবং এনার্জি ইউটিলিটি পোর্টফোলিও ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে আদানি পোর্টস। বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে মিলিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, যার লক্ষ্য হলো ভারতে বৃহৎ অবকাঠামোগত উন্নয়ন। অসাধারণ ও টেকসই সম্পদ তৈরির অটল প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠানটি ভারত ও বিশ্বের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x