শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

চেষ্টার ‘বহিষ্কৃত’ সভাপতির অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে নারী অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪
  • ১১৫

নিউজটি শেয়ার করুন

স্বেচ্ছাসেবী ও নারী কল্যাণমূলক সংগঠন ‘চেষ্টা’র সভাপতি লাইলা নাজনীন হারুনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তাকে বহিষ্কার করেছেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে নতুন সদস্য নিয়োগসহ বিভিন্ন আর্থিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন লায়লা নাজনীন। তার এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সহ-সভাপতি রাফেয়া আবেদীনসহ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা। অন্যথায় আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে স্বেচ্ছাচারিতায় রূপ দিয়েছেন লাইলা নাজনীন। একই সঙ্গে সংগঠনকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের নাম ভাঙিয়ে টাকা তুলে ভোগ করছেন। ঢাকা ক্লাব ও রাওয়া ক্লাবের বিলাসবহুল হলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে সেই টাকা করা ব্যয় করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সংগঠনের গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত তিনি। ৯ এর ২ ধারা উপেক্ষা করে মহিলা অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে গায়ের জোরে সংগঠন চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত তিনি।

এর আগে গত ২ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সদস্য ও আইনজীবী সাদেকুন নাহার পাপড়ি বলেন, ‘চেষ্টা’ ২০১৩ সালে সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত একটা অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনটি মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনাদের মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। এ কাজে সংগঠনের সদস্য চাঁদা ছাড়াও সরকার ও বিত্তবানদের অনুদান রয়েছে। চেষ্টার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচিত একটি কমিটিসহ সাধারণ সদস্যদের নিয়ে কাজগুলো করে আসছিল।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে সাবেক সহসভাপতি রাফেয়া আবেদীন বলেন, নারীদের নিয়ে এ ধরনের একটি মর্যাদাশীল সংগঠনকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। সংগঠনের সভাপতি তার পছন্দের দুই তিনজন সদস্যকে নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার মধ্য দিয়ে সংগঠনের টাকা তছরুপ করছেন। যা স্বনামে পরিচিত সংগঠনটির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সদস্যরা বলেন, সভাপতি হওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। নিজের ইচ্ছেমতো সদস্যদের বহিষ্কার করছেন। এমনকি তোয়াক্কা করছেন না আদালতের নির্দেশনার। প্রথম দিকে আমরা বছরে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ থেকে সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা অনুদান পেতাম। কিন্তু গত তিন বছরের কোনো হিসাব আমরা পাচ্ছি না। সভাপতি লায়লা নাজনীন ও সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা বেগম এবং তার ভাইয়ের মেয়ে কোষাধ্যক্ষ সিফাত ই নূর একক সিদ্ধান্তে কাজ করছে। আমরা আমাদের সংগঠনে বিতর্কিত উপদেষ্টা না রাখার আপত্তি জানালেও সভাপতি অজ্ঞাত কারণে বাদ দিচ্ছেন না। এর মধ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করে কমিটি বিলুপ্ত ও সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ক্ষমতার জোরে ফের তা চালু করেছেন সভাপতি লায়লা হারুন।

আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদেকুন নাহার বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে থেকে যে অনুদান পাওয়া যাচ্ছে তার কোনো হিসাবও দিচ্ছে না সভাপতি। লায়লা নাজনীন হারুন বিতর্কিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুণ অর রশীদের স্ত্রী। সাবেক এই জেনারেল চেষ্টার বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সেলিনা বেগম শেলি, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সহ-সভাপতি রাফেয়া আবেদীন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাঈদা মাহফুজ শাহীন, সাধারণ সদস্য সাদিকুল নাহার পাপড়ি, সাধারণ সদস্য ভিকারুন্নেসা চিনু, সাধারণ সদস্য খাদিজা বেগম।

ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন কানাডা থেকে নাহার আখতার, আফরিন সুলতানা তিথি, জান্নাতুল ফেরদৌস, অস্ট্রেলিয়া থেকে রাফিয়া রহমান টফি, ধানমন্ডি থেকে দৌলত জাহান প্রমুখ।

 

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x