কুষ্টিয়াতে লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। ৫০-৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। কাঁচা মরিচের দাম ২২০ টাকায় পৌছেছে, কমছে না পেঁয়াজ, চাল, ডিমের দামও। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্ত পরিবার। শুধু কুষ্টিয়াতে নয় জেলার ছয়টি উপজেলাতেও বেড়েছে সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম। আর এমন দফায় দফায় পন্যের দাম বাড়াতে বেশ বিপাকে পড়েছে সাধারন ক্রেতারা। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছে তাদের বেশি দামে পন্য কিনতে হচ্ছে যার ফলে তাদেরকেও চড়া দামেই পন্য বিক্রি করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২২০ টাকা, বেগুন ৬০-৬৫ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, কচুরলতি ৪০-৪৫ টাকা, ঝিঙে ৫০-৫৫ টাকা। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৮০ থেকে ৭৫ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, আলু ৫০ টাকা, শীতকালীন শিম ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫-৪০ টাকা, বরবটি সিম ৪০-৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৬০-৬৫ টাকা, আদা ২৫০ টাকা, মুলা ৪০-৪৫ টাকা, পটল ৭০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, শশা ৫৫-৬০ টাকা, ঢ্যাড়ষ ৫০-৫৫ টাকা কেজি ও ফার্মের ডিম ৩৮-৪০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। কুষ্টিয়া শহরে কাঁচা বাজার করতে আসা শীলা খান জানান, দফায় দফায় এভাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে আমরা নিম্মআয়ের মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সকল পন্যই আমাদের ক্রয় ক্ষমতার ব্ডােির চলে যাচ্ছে।
জেলার কুমারখালী উপজেলা শহরের তহ বাজারে সবজী ক্রয় করতে এসেছেন ক্রেতা হাসান আলী ও জুয়েল আহমেদ। তারা বলেন, ‘সবজির দাম অনেক বেশি। তাই প্রয়োজনের চেয়ে কম সবজি কিনতে হচ্ছে।’ ‘বাজার মনিটরিং জোরদার করা উচিত। মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে না। ’তারা আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত দামের কারণে বাজার থেকে সবজি কিনে খাওয়া মুশকিল।’ এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক ক্ষেতেই সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। যা এখনো পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে। সবজীর দাম বৃদ্ধির জন্য পাইকাররা সরাসরি চাষীর ক্ষেতে ছুটে যাচ্ছে। শহরতলীর তরুন মোড় ও গড়াই তীরের লালনবাজারে প্রতিদিন সকালে অস্থায়ী সবজী বাজার এখন বেশ সরগরম। বাইরের উপজেলা থেকেও পাইকারী ক্রেতা ছুটে আসছে সেখানে। এদিকে কুষ্টিয়া জেলা সহ ৬উপজেলার বাজারেও বেড়েছে চাউলের দাম। বাসমতি, মিনিকেট ও স্বর্ণা ধানের দাম মণ প্রতি গড়ে ১৫০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫০ কেজি ওজনের মোটা চালের বস্তা ছিল দুই হাজার টাকা। দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট ২ হাজার ৪০০ থেকে বেড়ে দুই হাজার ৬০০ টাকায়। দামের ঊর্ধ্বগতির জন্য খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা দায় চাপাচ্ছেন মিল মালিকদের ওপর।
তারা বলছেন, মিল থেকে মোটা চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় মোকামগুলোতে সংকট তৈরি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কুমারখালীতে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষ। ক্রেতারা বাজার মনিটরিংয়ের জোর দাবী করেছেন। এবিষয়ে জেলা বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সারাদেশের পন্যের দাম উদ্ধগতী। তবে সব সময় আমাদের বাজার মনিটরিং কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কোথাও অনিয়ম পেলে আমরা ভ্রা¤্রমান অভিযান অব্যঅহত রেখেছি।