শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের সম্পদের পাহাড়

অর্থনীতি ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১১১

নিউজটি শেয়ার করুন

কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। নিজ নামে ও বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত রেখেছেন অঢেল নগদ অর্থ। কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ লাইনের সামনে নির্মান করেছেন আলিশান ৪র্থ তলা বাড়ী, কুষ্টিয়া ছয় রাস্তার মোড়ে ফয়সাল টাওয়ারে রয়েছে দুইটা ফ্লাট, কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা শহরে গড়ে তুলেছেন আলীশান ২য় তলা ভবন, ঢাকা-মিরপুর সাড়ে এগার নম্বরে রয়েছে তিন কাঠার একটি প্লট। অভিযোগ রয়েছে, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিল আটকিয়ে উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গড়েছেন এই অঢেল সম্পদ। তদন্ত করলেই মিলবে যার সত্যতা।

অফিস সুত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলা এলজিইডি অফিসের তৃতীয় তলাতে গত বছরের শুরুতে এসি অফিস উদ্ভোধন হয়। আর এ অফিসে ১লা এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন কামরুজ্জামান। যোগদান পর থেকেই ঠিকাদারদের সাথে শুরু করেন দেন-দরবার। উৎকোচ না দিলেই কাজের নানা অনিয়মের দেখিয়ে আটকে দেওয়া হয় বিল। অনৈতিক সুবিধা দিলেই মিলে কাজের ভালো রিপোর্ট, অভিযোগ ঠিকাদারদের। এ নিয়ে ঠিকাদারদের সাথে বাক-বিতন্ডের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানায় অনেক ঠিকাদার।

জানা যায়, বিভিন্ন অনিয়মের কারনে গত ৭/৮ মাস পূর্বে তাকে কুষ্টিয়া থেকে পাবনাতে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতাবলে পূণ:রায় ফিরে আসেন কুষ্টিয়া কুষ্টিয়া জেলা এলজিইডি অফিস কার্যালয়ে। এই নির্বাহী প্রকৌশলীর বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায়। যার ফলে নিজ জেলায় তার কর্মস্থল হওয়া সরকারী চাকরি বিধি স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন বলে মনে করেন অনেকেই।  ইতিপূর্বে, খোদ এলজিইডি’র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের অভিযোগ করেছিলেন বলেও জানা যায়। তবুও থামেনি তার দৌড়াত্ব। অবৈধকে বৈধ বানিয়ে ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বার বারই ফিরেছেন নিজ জেলায়।

তার এই বিষয় নিয়ে গত সাত-আট মাস আগে জাতীয় দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল তার কপি ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করার পরেও তিনি এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে কুষ্টিয়া অফিসে কর্মরত রয়েছেন। সমস্ত ঠিকাদাররা বলছেন তার খুটির জোর কোথায়?

এ বিষয়ে ইমন এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর ঠিকাদার ইমন আলী জানায়, কুষ্টিয়া এলজিইডি’র এসি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের স্বেচ্ছাচারিতার কাছে আমরা অসহায়। অনৈতিক সুবিধা দিলে মিলে কাজের বিল। না দিলেই হতে হয় বিভিন্নভাবে হয়রানি। তিনি আরো বলেন, এই কর্মকর্তার অনিয়মের কারনে প্রতিনিয়তই বাধা সৃষ্টি হচ্ছে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে।

কুষ্টিয়ার আরো এক ঠিকাদার আরিফুর রহমান জানায়, কুষ্টিয়া এলজিইডি অফিসের সবকিছুই চলে নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের নিজ নিয়মে। তাকে সুবিধা না দিতে পারলেই ঠিকাদারদের হতে হয় বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার।

অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান জানায়, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সঠিক নয়। আমি ঘুষ খাইনা, আমি একজন হাজী মানুষ। তার অঢেল সম্পদ অর্জনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ২৫ বছর চাকরী করছি এগুলোতো করতেই পারি।

তিনি আরো বলেন, আমার এই এসি অফিসে কোন অর্থের কারবার নেই, টেন্ডার নেই সুতারাং এখানে ঘুষ খাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা, যা লেনদেন হয় সব দ্বিতীয় তলাতে। আমি শুধু কাজের মান যাচাই করে রিপোর্ট দাখিল করি।

নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীসহ দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করছে কুষ্টিয়াসহ তিন জেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও ঠিকাদার মহল।

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত আজকের অর্থনীতি ২০১৯।

কারিগরি সহযোগিতায়:
x